ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতীক শুধু নির্বাচনী চিহ্ন নয়, বরং তা হয়ে ওঠে ইতিহাস, আবেগ ও পরিচয়ের বাহক। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যে শাপলা প্রতীক পাওয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে দাবি জানাচ্ছে, তা স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রতীকের পেছনের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শাপলা প্রতীকের একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতার পর নানা সময়ে বিভিন্ন দল এই প্রতীক ব্যবহার করেছে, বিশেষত এটি সাধারণ মানুষের কাছে শান্তি, ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। তাই এনসিপি এই প্রতীক চাইছে—এটি কেবল একটি নির্বাচনী কৌশল নয়, বরং ভোটারদের মনে আবেগ জাগানোর একটি প্রচেষ্টা।
এনসিপির কৌশল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এনসিপি নিজেদের জাতীয় বিকল্প শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। শাপলা প্রতীক চাইবার পেছনে তাদের যুক্তি হলো—এই প্রতীক সাধারণ মানুষ সহজে চিনতে পারে এবং এটি গ্রামীণ ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে, এটি তাদের দলীয় আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও তারা দাবি করছে।
বিতর্ক ও সমালোচনা
তবে শাপলা প্রতীক নিয়ে এনসিপির আগ্রহকে অনেকেই দেখছেন রাজনৈতিক ব্র্যান্ডিং এর অংশ হিসেবে। সমালোচকদের মতে, নতুন দল হয়েও এমন একটি ঐতিহাসিক প্রতীক দাবি করা মূলত পরিচিতির ঘাটতি পূরণের কৌশল। এছাড়া প্রশ্ন উঠছে—প্রতীক বণ্টনে নির্বাচন কমিশন কতটা নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারবে, বিশেষত যখন বড় দলগুলোর প্রতীককে কেন্দ্র করে প্রায়ই জটিলতা তৈরি হয়।
সম্ভাব্য প্রভাব
শাপলা প্রতীক যদি সত্যিই এনসিপির হাতে যায়, তবে তারা একটি বড় রাজনৈতিক সুবিধা পাবে। প্রতীকের কারণে তারা গ্রামীণ ভোটারদের কাছে সহজেই জায়গা করে নিতে পারবে। অন্যদিকে, যদি এই প্রতীক তারা না পায়, তাহলে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে তাদের আরও বিকল্প প্রচারণা কৌশল খুঁজতে হবে।
রাজনীতিতে প্রতীক সবসময়ই শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। এনসিপি শাপলা প্রতীক পাবে কি না—এটি এখনো অনিশ্চিত। তবে বিষয়টি স্পষ্ট যে, প্রতীকের লড়াই আসলে ভোটারদের মন জয় করার লড়াইয়েরই প্রতিফলন। আগামী নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই বিতর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
লেখক : গণমাধ্যম কর্মী
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan